"গাছেরাও দিক চেনে"

অচল, অনড় গাছ। সে আবার দিক চিনবে কি করে? যত সব উদ্ভট কথা। না গো না! এক্কেবারে উদ্ভট নয়। খুব সত্যি। সব দিক না চিনলেও ওপর নীচ যে গাছ চেনে তা একটা ছোট্ট পরীক্ষাতেই বুঝে নেওয়া যায়। এসো পরিক্ষাটি করি।
যা যা সংগ্রহ করতে হবেঃ দুটো একই মাপের কাঁচের টুকরো [মোটামুটি চার ইঞ্চি লম্বা চার ইঞ্চি চওড়া], বুটিং পেপার কাঁচের মাপের, জল গোটা কয়েক বীজ [বড় মাপের বীজ যেমন কুমড়ো, লাউ ইত্যাদি], সুতো, সস্‌প্যান।
এখন যা যা করবেঃ বুটিং পেপারকে জলে ভিজিয়ে নিয়ে একটা কাচের টুকরোর ওপরে রাখা হল, এবং ওর ওপর বীজগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হল। বীজগুলোকে অন্য কাঁচের টুকরো দিয়ে চাপা দিয়ে রাখতে হবে। এই অবস্থায় দুটো কাঁচখন্ডকে সুতো দিয়ে বেঁধে দেওয়া হল।এখন সস্‌প্যানের ভেতরে ওদের শুইয়ে রেখে তাতে আধইঞ্চি গভীর করে জল ঢালা হল। রোজ একবার করে দেখবে বীজ থেকে অঙ্কুর বেরুলো কি না। অঙ্কুর বেরুনোর পর দেখবে অঙ্কুরের শেকড় নিচের দিকে আর কান্ড অংশ ওপরের দিকে যাচ্ছে। এখন গোটা জিনিসটাকে তুলে নিয়ে উল্টে সস্‌প্যানের মধ্যে আবার রেখে দাও। পরের দিনই দেখবে অবাক কান্ড। অঙ্কুরের শেকড় ঘুরে গিয়ে নিচের দিকে মুখ করে আছে আর কান্ড ওপরের দিকে ঘুরে গেছে।

কেন এই ঘটনা ঘটে ? গাছের শেকড় সবসময় মাটির নিচে যায় আর কান্ড সবসময় ওপরের দিকে ওঠে। পৃথিবীর আকর্ষণই ওদের জানিয়ে দেয় কোন দিকে যেতে হবে।শেকড় আর কান্ডের মাটির দিকে বা মাটির উল্টোদিকে যাওয়ার প্রবণতাকে বলে অভিকর্ষবৃত্তি।

সংকলনঃ 'খেলার ছলে বিজ্ঞান'
সম্পাদকঃ নীরদবরন হাজরা
মূল রচনাঃ জয়ন্ত রায়

No comments:

Post a Comment