হালকা জল-ভারী জল

জলের আবার হালকা ভারী। জল ঠান্ডা হোক আর গরম হোক তাতে জলই থাকে। এই ঠান্ডা গরম জল নিয়ে মজার পরীক্ষা করবো আমরা।

তোমায় যা যা সংগ্রহ করতে হবেঃ দুটো খালি দুধের বোতল, গরম জল, ঠান্ডা জল, রং, ড্রইং কাগজের একটা টুকরো (পুরোনো পোষ্টকার্ডও চলবে)
এবার যা যা করবেঃ দুটো বোতলের একটায় গরম জল ও অন্যটাতে ঠান্ডা জল ভরো। গরম জলের বোতল কিছু রং ঢেলে ঐ জল রঙ করো। এখন ঠান্ডা জলের বোতলের মুখে কাগজ চাপা দাও, আর তাকে উল্টে ধরো। ঐ ভাবে ধরে রেখে কাগজটাকে আস্তে আস্তে টেনে সরিয়ে নাও। এবার দেখো মজাটা। ঠান্ডা জল ওপরের বোতল থেকে নিচের বোতলে নেমে আসছে, সেই সঙ্গে নিচের রঙিন জল ওপরের বোতলে উঠে যাচ্ছে।

কেন এমন হয়ঃ  ঠান্ডা জল গরম জলের চেয়ে বেশী ভারী। অন্য কথায় এক গ্লাস ঠান্ডা জলের ওজন একই মাপের এক গ্লাস গরম জলের চেয়ে বেশী। তাই ঠান্ডা জলের বোতলকে গরম জলের বোতলের মুখে উপুর করে বসিয়ে দেওয়ার জন্য ঠান্ডা জল নিচে নামতে থাকলো আর সেই সঙ্গে গরম জল ওপরে উঠতে শুরু করলো।


সংকলনঃ 'খেলার ছলে বিজ্ঞান'
সম্পাদকঃ নীরদবরন হাজরা
মূল রচনাঃ জয়ন্ত রায়

ধোঁওয়া নামে নিচের দিকে

তা হয় কি?  হাওয়া গরম হলে হালকা হয় আর তা ওপর দিকে উঠে যায়। আগুনের ধোঁওয়াও ওপরে উঠে যায়। আজ আমরা এমন এক পরীক্ষা করবো তাতে পাবো ধোঁওয়া নিচের দিকেও নামে।

তোমাকে যা যা সংগ্রহ কতে হবেঃ খালি জুতোর বাক্স, মোমবাতি, দেশলাই, দুটোকাচের চিমনী, কাঁচি, ধুপ, সেলোটেপ তোমার মায়ের সাহায্য।
এখন যা যা করবেঃ জুতোর বাক্স্ ওপরের ডালায় ৬ইঞ্চি ব্যবধানে দুটো গর্ত করো। এর মাপ যেন চিমনীর নিচের মাপ থেকে ছোট হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। বাক্সের ভেতর মায়ের সাহায্যে একটা মোমবাতি বসাও। ডালার যে কোন একদিকের গর্তের ঠিক নিচেই ওটা বসাবে। এখন মোমবাতি জ্বালিয়ে বাক্সের ডালা বন্ধ করো। সেলোটেপ দিয়ে ধারের ফাঁক বন্ধ করো। চিমনী দুটোকে দুটো গর্তের ওপর বসাও। ধুপকাঠি ধরিয়ে যে চিমনীর নিচে মোমবাতি নেই তার ওপরে ধরো। এবার দেখবে ধুপের ধোঁয়া চিমনির মুখ দিয়ে নেমে যাচ্ছে।

কেন এমন হয়ঃ  বাক্সের ভেতরে মোমবাতি জ্বলার জন্য সেখানকার বাতাস গরম হয়। গরম বাতাস হালকা, তাই সে বাতির ওপরকার চিমণি দিয়ে বেরিয়ে যায়। এই কারণে বাক্সের ভেতর বাতাসের পরিমান কমে যায়। তখন কি হবে? বাইরে থেকে বাতাস অন্য চিমনি দিয়ে বাক্সের ভেতরে যাবে, এ ছাড়া বাক্সের ভেতর বাতাস যাওয়ার আর তো কোন পথ নেই। সেই বাতাসের টানে ধুপের ধোঁয়াও চিমনি দিয়ে ভেতরে চলে যায়। জেনে রাখো কালবৈশাখির ঝড়, ঘুণিঝড় এই কারণেই হয়। কোন জায়গায় বেশি গরম পড়লে সেখানকার বাতাস হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। আর এই ফাঁকা জায়গার দখল নেওয়ার জন্য ঠান্ডা জায়গা থেকে বাতাস ছুটে আসে। ঝড়ের আগে খেয়াল কোরো একটু বাশি গরম পড়ে, ঐ সময় বাতাসের চাপও কমে যায়।


সংকলনঃ 'খেলার ছলে বিজ্ঞান'
সম্পাদকঃ নীরদবরন হাজরা
মূল রচনাঃ জয়ন্ত রায়